একুশের কথা-নিশাদ

নিউজটি শেয়ার করুন

চাষী-মালি-ধোপা-নাপিত, খেয়াঘাটের মাঝি,
বণিক-শ্রমিক-ছাত্র জনতা, আদালতের কাজী,
শিশু-কিশোর-যুবক-বৃদ্ধ, উদার আর পাষাণ,
সবাই মোরা বাংলা বলি, শুনি বাংলায় গান;
বাংলা পড়ি, বাংলা লিখি, বাংলায় জয়োল্লাস,
বাংলায় ভাবি, বাংলায় করি স্বপ্নবীজের চাষ।।

বাংলা বিনে বোবা আমি, স্বদেশ-বুলা সাঁই,
বাংলা ছাড়া ভাব প্রকাশের উপায় জানা নাই।
দুঃখ-সুখের আদান-প্রদান চলছে অফুরন্ত-
বাংলা ভাষার নিরুদ্দিষ্টে পাইনা কোনো অন্ত।
বাংলা ছাড়া ভাব বিনিময় হয়না অকপটে,
প্রিয় এই বাংলা একবার পড়িল সংকটে।।

ঊনিশশো আটচল্লিশের একুশে মার্চ ঢাকায়,
বাংলার উপর শকুনের দল কুনজরে তাকায়।
বাংলামায়ের মুখের উপর ওদের দেশের ভাষা,
গায়ের জোরে চাপিয়ে দিয়ে খেলতে চাইল পাশা!
প্রতিবাদের ঢেউ উঠিল, উত্তাল পুরো বঙ্গ-
রাজপথে নামে ছাত্রসমাজ, জনতা দেয় সঙ্গ।
“রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, নয় রে অন্যকিছু,
প্রয়োজনে রক্ত দেব, তবু হটবো না পিছু”।।

শকুন যতই রাঙায় চোখ, প্রতিবাদ তত চড়ে,
ছাত্র-জনতা এক হয়েছে, ভয় নেই আর ঝড়ে।
বায়ান্নতে বেহাল দশা- শকুনেরা পেল ভয়,
পূর্ববঙ্গ ফুঁসছে ক্ষোভে- কখন কী যে হয়!
পরাজয়ের আভাস পেয়ে হয়ে পড়ে সন্ত্রস্ত;
ভাষার দাবি দমাতে তারা দাগালো আইনাস্ত্র।।

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ ছাত্র-জনতা মিলে,
রাজপথ কাঁপিয়ে তোলে মিছিলে মিছিলে।
দিশেহারা শকুনের দল হিতাহিত জ্ঞান ভুলি,
শান্তিপূর্ণ মিছিলে চালায় নির্বিচারে গুলি।
রাজপথে বয় রক্তস্রোত, লুটায় বহু প্রাণ,
জীবন দিয়ে রক্ষা পেল বাংলা ভাষার মান।
সালাম-বরকত-রফিক-জব্বার, আরও কত নাম-
মায়ের বুকটা খালি করে দিলো ভাষার দাম।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *