দাগনভূঞা আহমাদিয়া হাফেজিয়া মাদরাসায় ২৪ জন হাফেজকে পাগড়ি সংবর্ধনা

নিউজটি শেয়ার করুন

মোঃ আলাউদ্দিন লিংকন,দৈনিক জনতার অধিকার ডট কমঃ
ফেনীর দাগনভূঞা আহমাদিয়া হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা এবং মিফতাহুল জান্নাত মাদ্রাসায় (মহিলা হিফয শাখা) ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ২২ জন ছাত্র ও ২ জন ছাত্রী হিফজুল কুরআন সম্পন্নকারীদের পাগড়ি ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান এবং মাদরাসার ১৫৮ জন কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করা হয়েছে। সকালে মাদরাসা অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দাগনভূঞা আহমাদিয়া হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাদরাসার সিনিয়র সাংস্কৃতিক শিক্ষক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল জাবের।

সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন দাগনভূঞা আহমাদিয়া হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার প্রধান শিক্ষক, মিফতাহুল জান্নাত মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ মাওলানা ইমাম উদ্দিন মিয়াজী।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মুফতি ফারুক আহমেদ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দাগনভূঞা পৌরসভার মেয়র ওমর ফারুক খাঁন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দাগনভূঞা পৌরসভার প্যানেল মেয়র নুরুল হুদা সেলিম।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আরটিভি প্রতিনিধি আজাদ মালদার, ফেনী জেলা হাফেজ পরিষদের সভাপতি জাকির হোসেন তালুকদার, ইংরেজি শিক্ষক লিয়াকত হোসেন।
প্রধান আলোচক বলেন সকল প্রাইমারি স্কুলের সিলেবাসে শিক্ষা কারিকুলামে ইসলামের নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করলে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে। সন্তান হাফেজ হয়েছে কিন্তু সে যদি কুরআন ভুলে যায় তাহলে কবীরা গুনাহ হবে মাতা পিতারও। সেজন্য তার পিছনে আরো দশ বছর সময় দিয়ে তাকে বড় আলেম বানাতে হবে তাহলে দেশ ও জাতির জন্য সে নিজেকে তৈরি করতে পারবে। প্রযুক্তির অপব্যবহার থেকে সন্তানকে দূরে রাখান আহবান জানান তিনি।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন আজকের অনুষ্ঠানে অনেক অভিভাবক এসেছেন আপনাদের উদ্দেশ্যে বলবো আপনাদের সন্তানকে শুধুমাত্র ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, হুজুর বানানোর লক্ষ্যে নয় মানুষের মতো মানুষ বানানোর চেষ্টা করবেন। তাহলে শেষ বয়সে আপনাকে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে না। সপ্তাহে একদিন করে নীতি নৈতিকতা শিক্ষা, সমাজে কিভাবে চলতে হবে এসব শিক্ষা প্রদান করার আহবান জানান তিনি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, মাদরাসার শিক্ষক,কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে কুরআন তেলওয়াত, আরবী-ইংরেজী কথোপকথন, ইসলামী সংগীতসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করে অত্র মাদরাসার নিজস্ব সাংস্কৃতিক বিভাগ আল-ইমাম শিল্পী গোষ্ঠী।
অনুষ্ঠানে ১৫৮ জন কৃতি শিক্ষার্থীদের(সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা) বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
উল্লেখ্য, দাগনভূঞা আহমাদিয়া হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানাটি দীর্ঘ প্রায় ৫৩ বছর কুরআন শিক্ষা দিয়ে আসছে। বর্তমানে মাদরাসার চার হাজার স্কয়ার ফিটের একটি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গোরাবা তহবিল থেকে প্রায় ৬০০ জন এতিম ও দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পূন্যরুপে বিনা খরচে  পড়ালেখা, প্রাথমিক চিকিৎসা, জামাকাপড়, এদের মধ্যে অনেকের থাকা-খাওয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়। মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা ইমাম উদ্দিন মিয়াজী ব্যয়বহুল বহুতল ভবন নির্মাণ ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সকলের দান, যাকাত, ফিতরা, কুরবানির চামড়া, সাদাকা দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *